খবর

কালিম্পংয়ের ময়ুর গ্রাম, জেনে নিন বিস্তারিত

Featured Image

 সত্যজিৎ রায়ের ‘সোনার কেল্লা’ ছবির ময়ূরগুলোকে মনে আছে? জটায়ুর চরিত্রে সন্তোষ দত্তের বিখ্যাত সংলাপ কিংবা নকল ডঃ হাজরার ভয় পাওয়ার অনবদ্য দৃশ্য কেই বা ভুলতে পারে? তবে আপনি কি জানেন, ভারতের কালিম্পং -এর ময়ূর গ্রামের কথা ! যেখানে গাছে গাছে দেখা মিলবে ময়ুরের। 

এখানে আসলেই দেখতে পারবেন এক গাছ থেকে অন্য গাছে ময়ূর দিব্যি উড়ে যাচ্ছে। আরো একটু ভালো করে লক্ষ্য করলেই বুঝতে পারবেন, এখানে গাছে গাছেই ময়ূর ডেরা বেঁধেছে। পাহাড়বাসীর কাছে এটা হয়ত কিছুই না। আমরা যেমন কাক দেখতে অভ্যস্থ, এঁরা এখানে সেভাবেই রোজ ময়ূর দেখেন। কিন্তু আমাদের কাছে এই ময়ূরের ডাকের একটা আলাদা রোমাঞ্চ তো আছেই।  

উত্তরবঙ্গ জুড়ে এখন অজানা বেড়ানোর জায়গার ছড়াছড়ি। দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াং ছেড়ে এই সব অফবিট লোকেশনে এখন আগ্রহ বাড়ছে পর্যটকদের। যেখানে পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। আবার নিরিবিলিও সেই সব জায়গা। কালিম্পংয়ের কাছে এমনই এক অফবিট ট্যুরিস্ট স্পট হল ফুরুন গাঁও। একেবারে অচেনা একটি পাহাড়ি গ্রাম। 

ফুরুন গাঁওয়ে প্রকৃতি যেন সবটুকু উজার করে দিয়েছে। এখানকার বাসিন্দারা সকলেই ভুটিয়া। তাঁদের একমাত্র পেশা চাষবাস।  এখানে সারা বছর প্রচুর পাখি ভিড় করে। ময়ুর ছাড়াও পার্পল সানবার্ড, বার্ন সোয়ালোদের, বি হিটারদের দেখতে পাবেন। পাখিপ্রেমি তো বটেই, সাধারণ পর্যটকদেরও মন ভাল করে দেওয়ার মতো দৃশ্য।  

সবুজ পাহাড়ের ধাপ কেটে ধান-গম-ভুট্টা চাষ হয় অল্প পরিমাণে। ধান থেকে শুরু করে এলাচ, স্কোয়াশ সব রকম সবজির চাষ করে তারা। সেটাও অরগ্যানিক পদ্ধতিতে।  আর সেই ফসল খেতে সকাল সকাল হাজির হয় ময়ুরের দল। সূর্য ভাল করে ওঠার আগেই ময়ূরের দল ভিড় করে এখানে। এখানে থাকলে সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পড়লে দেখতে পাবেন, দলে দলে ময়ুর ঘুরে বেড়াচ্ছে গ্রামের চারিদিকে। কেউ কিচ্ছু বলে না। 

একবার সেখানে গেলে অবাক হয়ে যাবেন আপনি। ময়ূরগুলো যেন গ্রামবাসীদের পোষা। স্থানীয় মানুষেরা শিষ দিয়ে তাদের ডাকে। শিসের বিভিন্ন সুর রয়েছে। সকালবেলা শিষের শব্দে খেতে চলে আসে ময়ূর। আনন্দে পেখম মেলে ধরে কোনো কোনো ময়ূর। মুগ্ধ করে তাদের সেই রাজকীয় ভঙ্গি। 

প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্যের পাশাপাশি এটি যেন দু'দণ্ড শান্তির জায়গা। হট্টগোলের পরিবেশ একেবারেই নেই। এখান থেকে জলসা, ইচেগাঁও, রেসিখোলা ঘুরে দেখতে পারবেন। রাতের দৃশ্যও দারুণ। এখান থেকে কালিম্পংকে অসাধারণ দেখতে লাগে।

ফুরুন গাঁও যেতে হলে এনজেপি থেকে প্রথমে কালিম্পং আসতে হবে। সেখান থেকে গাড়িতে মুংসুং হয়ে পৌঁছে যাওয়া যায় ফুরুন গাঁওয়ে। মুংসুং থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরে ফুরুন গাঁও। এখানে থাকার জায়গা বলতে হোমস্টে। কালিম্পং থেকে ফুরুন গাঁওয়ের দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার।