খবর

সাপের কামড়ে ঘোড়া কেন মরে না?

Featured Image

বেজিকে সাপ সবসময় ভয় পায়। কারণ বেজি এক ধরনের বিশেষ গাছের শেকড় খেয়ে সাপের উপর আক্রমণ করে। তাই বেজিকে সাপ ছোবল দিলেও সে মারা যায় না। আবার ঘোড়াও সাপের কামড়ে মারা যায় না। তবে তিনদিন অসুস্থ থাকে, তারপর সুস্থ হয়ে যায়। আর এই ঘোড়া থেকে আসে পৃথিবীর সব সাপের বিষের প্রতিষেধক এন্টি ভ্যানম।

পৃথিবীতে খুব অল্প সংখ্যক প্রাণী নিজের শরীরে সাপের বিষ প্রতিরোধের ওষুধ তৈরি করতে পারে। যেমন:বেজি, উট, ঘোড়া, হাঙ্গর। কোন একটি সাপ, ধরুন, কিং কোবরা'র এন্টি ভ্যানম তৈরি করতে হলে হলে, ওই সাপের বিষ ঘোড়ার শরীরে ঢুকিয়ে দিতে হয়। প্রচুর পরিমাণ ঢোকালেও সমস্যা নেই। ঘোড়ার কিছু হবে না। কিছু হবে না বলতে, ঘোড়া মরবে না। তবে ঘোড়া তিনদিন অসুস্থ থাকবে। এই তিনদিনে ঘোড়ার রক্তে ওই সাপের বিষের এন্টি ভ্যানম তৈরি হয়ে যাবে ।

ঘোড়ার শরীর থেকে রক্ত নিয়ে তার লাল অংশ আলাদা করা হয়। সাদা অংশ অর্থাত্ ম্যাট্রিক্স থেকে অ্যান্টি ভেনম আলাদা করা হয়। ঘোড়া বেশ স্বাস্থ্যবান এবং অনেক রক্ত থাকে বলে, গড়ে প্রতি ঘোড়া থেকে প্রায় ৬ লিটার রক্ত নেওয়া হলেও ঘোড়ার তেমন ক্ষতি হয় না। এখন এই এন্টি ভেনমের শুদ্ধিকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তাকে শিশিতে ভরে বাজারে সরবরাহ করা হয়।

চিকেন পক্সের এন্টিবডি এবং সাপের বিষের এন্টি ভেনমের মূলনীতি প্রায় একই। চিকেন পক্সের ক্ষেত্রে এন্টিবডি তৈরি করে আমাদের শরীর। আর সাপের বিষের ক্ষেত্রে সেটি তৈরি হয় ঘোড়ার শরীরে। এই এন্টি ভেনম সাপে কাটা রোগীর শরীরে ইনজেকশন করলে এন্টি ভেনম শরীরে থাকা ভেনমকে অকার্যকর করে রোগীর জীবন বাঁচায়।

সাপের বিষ প্রতিরোধে তৈরি হওয়া এন্টি ভ্যানম যা মানুষকে সাপে কামড় দিলে প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার করা হয়, তা তৈরি করতে সমগ্র বিশ্বজুড়ে রয়েছে অসংখ্য সাপের বিষ প্রতিষেধক তৈরির এন্টি ভ্যানম কোম্পানি। এদের মূল কাজ হচ্ছে ঘোড়ার শরীরে সাপের বিষ প্রয়োগ এবং পরবর্তীতে ঘোড়ার শরীরে তৈরি হওয়া এন্টি ভ্যানম থেকে মানুষের জন্য সাপের ছোবলের বিষ প্রতিরোধী ভ্যাক্সিন প্রস্তুত করা।