খবর

FY22 বাংলাদেশে বিদেশী সংস্থাগুলোর বিনিয়োগ বেড়েছে ১৯%

Featured Image

অর্থনীতি ডেস্ক : 

বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক বহির্মুখী বিনিয়োগের কারণে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২০২১-২০২২ অর্থবছরে বিদেশী সংস্থা থেকে সরাসরি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে ১৯শতাংশ।

স্থানীয় সংস্থাগুলো FY22-এ মোট ৭০.৭১মিলিয়ন ডলার যা প্রায় ৭শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।

FY21-এ ৫৯.৩৪ মিলিয়ন ডলার যা প্রায় ৬শত কোটি টাকা বৈদিশিক বিনিয়োগ বা ঋণ পেয়েছে।

বাংলাদেশ সরকার ২০১৫ সালে ফরেন এক্সচেঞ্জ রেগুলেশন অ্যাক্ট সংশোধন করার পরে কয়েকটি শর্তজুড়ে দেয়। যার ফলে গত ৬বছরে উল্লেখযোগ্যভাবে বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে।


বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, ২০১৫ সালের এই সংশোধনীর মাধ্যমে ২০টির ও বেশি দেশ বাংলাদেশে তাদের ব্যবসা শুরু ‍করেছে।

FY17 থেকে FY22 পর্যন্ত বৈদেশিক মোট বিনিয়োগ ৩৫৮ মিলিয়ন ডলার যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৩৬০০ কোটি টাকা।


বাংলাদেশের পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, "ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিদেশে বিনিয়োগে বাধা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই ফলস্বরূপ, দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশে স্বীকৃতি পাবে। বিদেশী প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগের পরিমাণও বাড়বে।"

সম্প্রতি, একটি বৈদেশিক প্রতিষ্ঠান ৩হাজার কোটি টাকা হোটেলে প্রোপার্টিতে বিনিয়োগ করেছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অনুমতি নেয়নি।

আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, বেশ কয়েকটি বিদেশি প্রতিষ্ঠান দেশি প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিনিয়োগ করেছে এরকম তথ্য পাওয়া যায়। তারা কিভাবে এই বিনিয়োগগুলো পাচ্ছে তা কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকারকে দেখতে হবে। এবং প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

২০১৫ সালে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩০বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করায় সরকার প্রথমবারের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বহির্মুখী বিনিয়োগের সুযোগ করে দিয়েছিল।


২০২০ সালের মধ্যে উচ্চ রিজার্ভ বাংলাদেশ ব্যাংককে তাদের নীতিকে উন্মুক্ত করার জন্যও প্ররোচিত করেছে। বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পূর্বানুমতি ছাড়াই দেশে
রেমিট্যান্স বহির্ভূত করার অনুমতি দিয়েছে।

বিভিন্নভাবে রেমিট্যান্সের উপর শিথিল করার উদ্দেশ্য ছিল বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা। কিন্তু গত দুই অর্থবছরে এফডিআই প্রবৃদ্ধি না হওয়ার কারনে মনে করা হচ্ছে এসকল নীতি খুবই অল্প কাজ করছে। বরং বিপুল পরিমানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে গেছে।

গত বছরের আগস্টে রিজার্ভ বেড়ে দাড়িয়েছিল ৪৮ বিলিয়ন ডলারে কিন্তু বাজারে তীব্র ডলার সংকটের কারণে ডিসেম্বরের মধ্যে ৩৪বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে গেছে।

এফডিআই ইনফ্লো, যা FY19-এ ৫০শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। FY20 মহামারীর সময়ে নেমে এসেছে ৩৯শতাংশ।


বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, FY21-এ এফডিআই কিছুটা বেড়েছে ৫.৭শতাংশ এবং গত অর্থবছরৈ ৩৭শতাংশ।

এদিকে, অক্টোবরে রিজার্ভ দাড়িয়েছে ৩৫ বিলিয়ন ডলারে। গত দুই অর্থবছরে এফডিআই বাড়লেও জিডিপি অপরিবর্তত রয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, গত তিন বছরে জিডিপির নেট এফডিআই প্রবাহ ১শতাংশ এর কম ছিল।

যখন দ্রুত বৈদেশিক মুদ্রার হ্রাস হচ্ছিল ফরেক্স মার্কেট তীব্র চাপের মুখে ছিল। তখন বাংলাদেশ ব্যাংক এফডিআই প্রবাহ শিথিল নীতির প্রভাব মূল্যায়নের জন্য কমিটি গঠন করে।

বাংলাদেশ ব্যাংক করোনা মহামারী সময়ে বিদেশী বিনিয়োগদাতাদের আকৃষ্ট করার জন্য বহির্মুখী রেমিট্যান্সের উপর নজরদারি শিথিল করেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিকল্প তহবিল এবং ওপেন এন্ড মিউচুয়াল ফান্ডগুলোতে বিদেশী বিনিয়োগের অনুমতি দিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন নীতি শিথিলকরনে যে ফলাফল এসেছে তা পর্যালোচনা করার জন্য নয় সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।



যেসকল প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেছে


নীট বহির্মুখী এফডিআই-এর মধ্যে বাংলাদেশী সংস্থায় সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করেছে যুক্তরাজ্য, যা গত অর্থবছরে ৩২.৬২ মিলিয়ন ডলার যা এর আগের অর্থবছরের থেকে ৪৬.০১শতাংশ বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিনিয়োগকারী হংকং ১৫.৫০ মিলিয়ন ডলার এরপরে রয়েছে নেপাল ৬.৮০ মিলিয়ন, ভারত ৫.২৩ মিলিয়ন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত ৩.২৬মিলিয়ন ডলার।


এই বিনিয়োগ খাতগুলো হলো আর্থিক মধ্যস্থতাকারী ৬৬.০৯ মিলিয়ন ডলার। খনি এবং খনন ৩.১৪ মিলিয়ন, যন্ত্রপাতি পন্য ১.০৪ অন্যান্য উৎপাদন ০.৩৩, রাসায়নিক এবং ফার্মাসিটিক্যালস ০.০৯মিলিয়ন এবং ট্রেডিং ০.০২মিলিয়ন ডলার।