বিশ্বের অনেক দেশেই আলু প্রধান খাদ্য। পাশাপাশি এটি সাশ্রয়ী খাবার হিসেবে পরিচিত। সব্জি হোক বা কোনও তরকারি, রান্নায় আলু ছাড়া এসব পদ কল্পনা করা যায় না। আলু মোটামুটি সব দেশেই জনপ্রিয় খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সারা বিশ্বে আলুর চাহিদাও প্রচুর। বিশ্বের সকল দেশেই দামে তুলনামূলক স্বস্তা আলু।
কিন্তু এমন এক ধরনের আলু আছে যার দাম শুনলে ভিরমি খেতে হতে পারে কিংবা আলুকে সস্তার সব্জি বলে মনে না-ও হতে পারে, আলুর দাম যে কম, সে ধারণাকে একেবারেই পাল্টে দিয়েছে ফ্রান্সের লা বোনোত আলু। সূত্র: দ্যা ইকোনোমিক টাইমস।
ভাবুন তো ,যদি সেই আলুর কেজিপ্রতি দাম বাংলাদেশি মুদ্রায় হয় ৫৫ হাজার থেকে ৬৫ হাজার টাকা। হ্যাঁ, কল্পনা করা কষ্টকর হলেও বাস্তবে রয়েছে এমন আলু— ইতোমধ্যে যা বিশ্বের সবচেয়ে দামী আলুর স্বীকৃতি আদায় করে নিয়েছে। ফ্রান্সে এ ধরনের ১ কেজি আলুর দাম প্রায় ৫৫৫ ইউরো যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬৫ হাজার টাকা।
এ আলু শুধু দামে নয়, স্বাদেও অন্যান্য প্রজাতির আলুর থেকে একেবারে আলাদা। এর স্বাদ সামান্য টক। তে আছে হালকা লেবু ও আখরোটের স্বাদ। খাওয়ার পর একটু নোনতা লাগবে। কিছুটা চিনাবাদামের মতোও স্বাদ এই আলুর।
এমনিতে ফ্রান্সের ইলে ডি নয়েরমৌতিয়ের আলু চাষের জন্য বিখ্যাত। প্রতি বছর ১০ হাজার টন আলু উৎপাদিত হয় দ্বীপটিতে। সেই দ্বীপের মাত্র ৫০ বর্গমিটার এলাকায় চাষ করা হয় এই ধরণের আলু । বছরে মাত্র এই আলুর উৎপাদন হয় মাত্র ১০০ টন। এই আলু উৎপাদনের ক্ষেত্রে সামুদ্রিক শৈবাল এবং জলজ উদ্ভিদকে প্রাকৃতিক সার হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
বছরে মাত্র ১০ দিন পাওয়া যায় বিরল প্রজাতির এই আলু। যেহেতু এত বিপুল পরিমাণ আলুর মধ্যে লা বোনোত আলুর পরিমাণ মাত্র ১০০ টন সেহেতু এ জাতের আলুর দাম বেশি হওয়ার অন্যতম কারণ এটি। লা বোনোত আলু উপাদেয় খাবার হিসেবে পরিচিত। বছরে মাত্র একবার এক সপ্তাহের জন্য এ জাতের আলু তোলা হয়ে থাকে। এ ধরনের আলু খোসাসহ খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
বালু জমিতে চাষ হয় ‘লা বোনোতে’। অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে এই আলু চাষ করা হয়। আলু তোলাও হয় অত্যন্ত যত্ন সহকারে। হাত দিয়ে এক এক করে তোলা হয় এই আলু। প্রতি বছরে এক সপ্তাহ এই আলু তোলার কাজ চলে। প্রায় আড়াই হাজার শ্রমিক এক সপ্তাহ ধরে বিরল এ জাতের আলু তুলে থাকেন। আলুর খোসা না ছাড়াতে পরামর্শ দেন কৃষকরাও । কারণ খোসা ছাড়ালে এই আলুর স্বাদ এবং গন্ধ সব নষ্ট হয়ে যায়।
