খবর

কক্সবাজারে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত

Featured Image

বাংলাদেশের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরসমূহকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

শনিবার (১৩ মে) সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঘূর্ণিঝড় নিয়ে এক সভা শেষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, বাতাসের গতিবেগ কমে যাওয়ায় ঘূর্ণিঝড় মোখা সুপার সাইক্লোন হচ্ছে না। এটি অতি প্রবল (ভেরি সিভিয়ার সাইক্লোন) ঘূর্ণিঝড়।

এর আগে, আবহাওয়া অধিদপ্তরের মিডিয়া সেন্টারে এক ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির যুগ্ম পরিচালক মো. আসাদুর রহমান বলেন, সেন্টমার্টিন, টেকনাফ, উখিয়া অঞ্চলে মোখার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে। এটি যখন তীরে আছড়ে পড়বে তখন বাতাসের গতিবেগ থাকবে ১৬০ কিলোমিটারের বেশি। এর প্রভাবে যে বৃষ্টি হবে, তাতে পাহাড় ধসের শঙ্কা আছে। একটানা আট ঘণ্টার বেশি প্রবল বৃষ্টি হলে পাহাড়ধসের আশঙ্কা থাকে। প্রবল বৃষ্টির হতে পারে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগে। সিলেটেও প্রভাব থাকবে তবে, ঢাকায় কম হবে। 

আসাদুর রহমান বলেন, মোখার প্রভাব সিলেট পর্যন্ত থাকবে। বর্তমানে এর ডায়ামিটার ৫০০-৫৫০ কিলোমিটার। ডায়ামিটার যদি ২৫০ কিলোমিটারও থাকে, তাও তো কম না। তীর থেকে ৪০০ কিলোমিটারের মধ্যে এলে এর গতি থাকবে ১৬০-১৭৫ কিলোমিটার। কিন্তু এটা আরও গতি সঞ্চার করতে পারে। এই গতিতে এগিয়ে এলে কাল (রোববার) সকাল ১০টা থেকে ঝড়ো হাওয়ার পরিমাণ বাড়বে।

আবহাওয়াবিদ ড. মো. আবুল কালাম মল্লিক বলেন, প্রত্যেকটা সাইক্লোনের বৈশিষ্ট্য স্বতন্ত্র। সিডরের সঙ্গে এর তুলনা হলো, যতক্ষণ পর্যন্ত এটা বঙ্গোপসাগরে থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত এর শক্তি ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকবে। উপকূলে যাওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত এটা শক্তি সঞ্চয় করতে থাকে। বর্তমানে সাগরে অবস্থানকালীন মোখার দমকা বাতাসের সঙ্গে যে ঝড়ো হাওয়া বইছে তার সঙ্গে সিডরের মিল রয়েছে। উপকূল অতিক্রম করার সময় কোনো কোনো ক্ষেত্রে বৈশিষ্ট্য, গতিবেগ, দমকা বাতাস বা ঝড়ো হাওয়ার ধরন পরিবর্তন হয়। সে কারণে বাতাসের গতিবেগ কম বেশি হয়। তাই সিডরের মতো হবে এ রকম না বলে প্রায় সিডরের সমতুল্য গতিবেগ নিয়ে মোখা মিয়ানমার ও বাংলাদেশের কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিন উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে।

১৪ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আজ সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণে ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে ১৪ মে সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে কক্সবাজার ও উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। শনিবার (১৩ মে) রাত থেকে চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার অগ্রভাগের প্রভাব শুরু হতে পারে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, ভোলা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৮ (আট) নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮ থেকে ১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।