খবর

রোহিঙ্গারাদের জন্য খাদ্য সহায়তা কমানোর ঘোষণা : জাতিসংঘ

Featured Image

নিউজ ডেস্ক:

জাতিসংঘের খাদ্য বিষয়ক সংস্থা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) তহবিলে অর্থ সংকট দেখা দেওয়ায় কারনে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা কমানোর ঘোষণা দিয়েছে।

এমন খবরে হতাশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বার্তা সংস্থা এএফপিকে কয়েকজন রোহিঙ্গা নেতা জানিয়েছেন, সহায়তা কমানোর প্রভাব হবে ‘বিধ্বংসী’।

গতকাল শুক্রবার ডব্লিউএফপি এই প্রথমবারের মতো সহায়তার পরিমাণ কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। সংস্থাটি জানায়, রোহিঙ্গাদের আগামী মার্চ থেকে মাসিক ভাতা ১২ ডলারের বদলে ১০ ডলার করে দেওয়া হবে। রোহিঙ্গাদের জন্য যে তহবিল গঠন করা হয়েছে সেখানে প্রায় ১২৫ মিলিয়ন ডলার ঘাটতি থাকায় এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে তারা।

ডব্লিউএফপি আরও জানায়, যদি তহবিলে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকে তাহলে এপ্রিল থেকে সহায়তার পরিমাণ আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে। ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অত্যাচারে বাধ্য হয়ে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এরপর থেকেই তাদের খাদ্য সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে জাতিসংঘের এ সংস্থাটি।


সহায়তার পরিমাণ কমানোর খবর শুনে রোহিঙ্গা নেতা সায়েদুল্লাহ বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘আমরা বুঝতে পারছি রোহিঙ্গাদের প্রতি বিশ্বের নজর কমছে।’

‘কিন্তু ডব্লিউএফপি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে শরণার্থী শিবিরে মানবিক বিপর্যয়ের পথ সুগম হবে বলে মনে করা হচ্ছে ।’

সলিমুল্লাহ নামের অপর এক নেতা বলেছেন, সহায়তার পরিমাণ কমার বিষয়টি শরণার্থী শিবিরে অপরাধ বাড়িয়ে দেবে। যাতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে নারী ও শিশুরা।‘এটি হবে একটি বিধ্বংসী আঘাত। শরণার্থী শিবিরে সন্ত্রাসবাদ, মাদক এবং মানব পাচার বৃদ্ধি পাবে, বলেন সলিমুল্লাহ।’

২০১৭ সালে রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা চালায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সেই সময় একসাথে ৭ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। তারা বাংলাদেশে এসে হত্যা, ধর্ষণ এবং অগ্নিসংযোগের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানান।

বর্তমানে এসব রোহিঙ্গাকে সহায়তা অব্যাহত রাখতে হিমশিম খাচ্ছে বাংলাদেশ। এছাড়া রোহিঙ্গাদের অন্য কোথাও পুনর্বাসন করা অথবা তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে পাঠাতেও পারছে না সরকার।

যেসব রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে বসবাস করেন তাদের বাইরে কোথাও কাজ করার সুযোগ নেই। ফলে বেঁচে থাকতে তারা পুরোপুরি মানবিক সহায়তার ওপরই নির্ভরশীল।

ডব্লিউএফপি জানিয়েছে, শরণার্থী শিবিরে থাকা রোহিঙ্গা শিশুদের প্রতি ৮ জনের মধ্যে একজন অপুষ্টিতে ভুগছে। এছাড়া গর্ভবতী এবং বুকের দুধ খাওয়ানো ৪০ শতাংশ মা রক্ত স্বল্পতায় ভুগছেন।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা জানিয়েছে, উন্নত জীবনের আশায় শরণার্থী শিবির থেকে অনেক রোহিঙ্গা এখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাগর পথে অন্য
কোনো দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। যার মধ্যে গত বছরই এমন ঝুঁকি নিয়েছেন প্রায় ২ হাজার রোহিঙ্গা।

ধারণা করা হয়, সাগর পথ পাড়ি দিতে গিয়ে এখন পর্যন্ত প্রায় ২০০ জন প্রাণ হারিয়েছেন বা নিখোঁজ হয়ে গেছেন।

সূত্র: এএফপি