খবর

গ্যাস অনুসন্ধান ও উন্নয়ন কার্যক্রমে আশাতীত সাফল্য পাচ্ছে বাপেক্স

Featured Image

নিউজ ডেস্ক:

রাষ্ট্রায়ার প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রডাকশন কোম্পানি (বাপেক্স) গ্যাস অনুসন্ধান ও উন্নয়ন কার্যক্রমে আশাতীত সাফল্য পাচ্ছে।


চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বাপেক্স মোট ৮টি অনুসন্ধান ও উন্নয়ন কূপে কাজ করেছে। আর তার সবক'টিতেই গ্যানের সন্ধান ও সরবরাহ বেড়েছে। এ সময়ে বাপেক্স জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করার জন্য দৈনিক অন্তত ১৩৩ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎস বাড়িয়েছে। যদিও স্থানীয় উৎস থেকে গ্যাসের পরিমাণ কম কিন্তু সংকটময় পরিস্থিতিতে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়া ওই গ্যান বড় ভূমিকা রেখেছে। বাপেক্সের তৎপরতায় গ্রিডে বাড়তি গ্যাস যুক্ত হওয়া বড় সাফল্য। গ্যাস সংকটে থাকা জ্বালানি বিভাগের জন্য তা কিছুটা হলেও স্বস্তিদায়ক। জ্বালানি বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।


সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, তীব্র গ্যাস সঙ্কট সামাল দিতে জ্বালানি বিভাগ স্থানীয় উৎস থেকে সরবরাহ বাড়ানোর বিষয়ে উদ্যোগ নেয়। পেট্রোবাংলার লক্ষ্য হলো ২০২৫ সাল নাগাদ জাতীয় গ্রিডে ৬১৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যুক্ত করা। তারই ধারাবাহিকতায় বাপেক্স বিভিন্ন কূপ খনন, সংস্কার ও ওয়ার্কওভারের উদ্যোগ নেয়। চলতি বছর সংস্থাটি ৮টি গ্যাসকূপে কাজ করেছে। ওসব কূপ খনন করে দৈনিক ১৩৩ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার উৎস তৈরি হয়েছে ইতোমধ্যে কয়েকটি কূপের গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। দুই-তিন মাসের মধ্যে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে বাকি কূপগুলোর গ্যাসও।


সূত্র জানায়, বাপেক্স। চলতি বছরের জুনে কুমিল্লার শ্রীকাইলে অনুসন্ধান কূপ খনন শুরু করে এবং ডিসেম্বরেই কূপের খনন কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। বর্তমানে ওই কূপ থেকে দৈনিক ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়ার অপেক্ষা আছে। তার আগে রাশিয়ার তেল-গ্যাস অনুসন্ধানকারী প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রম আগস্টে ভোলার


রূপান্তরের মাধ্যমে উত্তোলন করে গ্যাস সরবরাহের পরিকল্পনা করছে। এরইমধ্যে বাপেক্স, পেট্রোবাংলা ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওই গ্যাস মূল ভূখণ্ডে আনতে কাজ শুরু করেছে। এদিকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির জন্য কাতার ও ওমান হলো বাংলাদেশের দুটি দীর্ঘমেয়াদি উৎস।
তার মধ্যে জ্বালানি বিভাগ কাতার থেকে সবচেয়ে বেশি এলএনজি আমদানি করছে। ওই দেশটি থেকে গত দুই অর্থবছরে এলএনজি আমদানি করতে ২৩ হাজার ১৩৪ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। শুধু কাতার থেকে গত দুই অর্থবছরে যে পরিমাণ ব্যয়ে এলএনজি আমদানি করা হয়েছে, গত ১৩ বছরে বাপেক্স তার মাত্র এক-চতুর্থাংশ অর্থ পেয়েছে। বিগত ২০০৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বাপেক্সের গ্যাস অনুসন্ধান ও উন্নয়নমূলক নানা ধরনের প্রকল্পে মোট ৫ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে।

আর ২০২০-২১ অর্থবছরে কাতার থেকে জীবাশ্ম জ্বালানি পণ্য আমদানিতে ব্যয় হয়েছে ৭ হাজার ৫৯৮ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৫৩৬ কোটি টাকায়। তবে দীর্ঘমেয়াদি ও স্পট এলএনজি আমদানির অর্থ হিসাব করলে গত দুই অর্থবছরে যথাক্রমে ১৭ হাজার ৬৯২ কোটি ও ৩৮ হাজার ৬৬০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। অর্থাৎ মোট ব্যয়ের পরিমাণ ৫৬ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা। এলএনজি আমদানিতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেও পেট্রোবাংলা পর্যাপ্ত জ্বালানির সংস্থান করতে পারছে না।

এমন অবস্থায় পেট্রোবাংলা দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনে জোর দিয়েছে। আর স্থানীয় রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি বাপেক্সকে দিয়ে গ্যাস অনুসন্ধান ও উন্নয়ন কার্যক্রম চালিয়ে গত এক বছরে আশাতীত সাফল্য মিলেছে। অন্যদিকে জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্ববাজার থেকে যখন গ্যাস কেনা যাচ্ছে না তখন স্বল্প সময়ে বাপেক্সের তৎপরতা চোখে পড়ার মতো। সংস্থাটি গত এক বছরে সংস্কার ও অনুসন্ধান কূপে যে পরিমাণ গ্যাস পেয়েছে তা সাফল্যের তালিকাকেই ভারি করে।

তবে সংস্থাটিকে আরো বড় আকারে কাজে লাগানোর সুযোগ রয়েছে। সেক্ষেত্রে জ্বালানি বিভাগের সদিচ্ছার প্রয়োজন। এ বিষয়ে বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ আলী জানান, বাপেক্স গত এক বছরে ১০টি কূপ খনন, সংস্কার ও উন্নয়নের কাজ করেছে। অতীতে এত স্বল্প সময়ে এ ধরনের কাজ হয়নি