খবর

বাবার লাশ রেখে টাকা ভাগাভাগিতে ব্যস্ত সন্তানরা -৪০ ঘণ্টা পর দাফন

Featured Image

নিউজ ডেস্ক :

বাবার মৃত্যুর পর লাশ দাফনের ব্যবস্থা না করে তার পেনশনের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে ঝগড়া-বিবাদে জড়িয়েছে সন্তানরা। দাফন না করে অ্যাম্বুলেন্সে লাশ রেখে প্রায় ৪০ ঘণ্টা পর সমবণ্টনের আশ্বাসে বাবার লাশ দাফন করেছে তারা।

সোমবার চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নে মনির আহমদের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এদিন বেলা ১১টায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, ৬৫ বছর বয়সী মনির আহমদ একটি তেল কোম্পানিতে চাকরি করতেন। গত বছর তিনি অবসরে যান। তার স্ত্রী, তিন মেয়ে ও দুই ছেলে আছে। অবসরে যাওয়ার পর তার পেনশনের ৫০ লাখ টাকা নিয়ে দুই ছেলে ও তিন মেয়ের বিরোধ চলছিল। স্ত্রী পক্ষ নেন ছেলেদের। এরই মধ্যে ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে শনিবার মারা যান তিনি। এসময় সন্তানরা লাশ দাফন না করে পেনশনের টাকা কে কত নেবে, তা নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে রবিবার স্থানীয় ইউপি সদস্য বৈঠক করে সমাধানের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।

বিষয়টি মীমাংসা না হওয়ায় রবিবার মনির আহমদের লাশ দাফন করেনি ছেলেরা। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অ্যাম্বুলেন্সে এনে লাশ রেখে দেন বাড়ির পাশের সড়কে। ছেলেদের দাবি, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কৌশলে ৩০ লাখ টাকা ব্যাংক থেকে সরিয়ে নিয়েছে তাদের বোনেরা।


বিষয়টি পরে থানা পুলিশ পর্যন্ত গড়ায়। সন্তানদের এমন কীর্তিতে হতবাক হয়ে গেছেন স্থানীয়রা। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুনুর রশিদ বলেন, সকালে উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী, কর্ণফুলী থানার ওসি দুলাল মাহমুদ ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ আমরা মরহুম মনির আহমদের পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলি। অবসরের টাকা সমবণ্টনের আশ্বাস দিলে মনির আহমদের ছেলেরা বাবার লাশ দাফন করতে সম্মত হয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান দিদারুল আলম বলেন, এ ঘটনায় আমরা জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, বৃদ্ধের অসুস্থতার সময়ে যে টাকা খরচ হয়েছে, তা বাদ দিয়ে তার অ্যাকাউন্টে যে টাকা আছে, সেগুলো তার সন্তানদের মধ্যে ভাগ হবে। সেই সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে সোমবার সকালে বৃদ্ধের লাশ দাফন করা হয়েছে।