খবর

জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকদের হিংস্র থাবা দৃশ্যমান হচ্ছে: কাদের

Featured Image

নিউজ ডেস্কঃ

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আজ আমাদের দেশ গভীর ষড়যন্ত্রের মুখে। এ দেশ আবারও সাম্প্রদায়িকতার ছোবলে আক্রান্ত, জঙ্গিবাদের যারা এদেশে সূচনা করেছে, তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় আবারও হিংস্র থাবা দৃশ্যমান।

 

গতকাল বুধবার দুপুরে সোনারগাঁয়ে মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে একথা বলেন তিনি।

কাদের বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের আদলে স্মার্ট জাদুঘর বানাবো। আমি একটি ভুল করেছি। আমি কুষ্টিয়ায় লালন শাহ্কে ইট পাথরের খাঁচায় বন্দি করেছি। এখন সেখানে গেলে আফসোস হয়। কেন করলাম। তখন যারা বিরোধিতা করেছিল ঠিক করেছিল। কারণ লালনকে ইট পাথরের খাঁচায় মানায় না। সেই বড় বড় গাছ কেটে ফেলা হয়েছে বিল্ডিং বানাতে গিয়ে।

 

তিনি আরও বলেন, এই ভূমি বঙ্গবন্ধুর প্রিয় ভূমি। এটাকে ইট পাথরে বন্দি করবেন না। সংস্কৃতির আসল রূপ ধরে রাখতে হবে। বিল্ডিং করে কোনো লাভ নেই। বাঁশ দিয়ে আপনারা যে সেতু তৈরি করেছেন সেটাই এখানকার ঐতিহ্য। এটাকে বহাল রাখতে হবে। এটার আদি রূপটাকে সঠিক জায়গায় রাখতে হবে। এখানে এসে ইট পাথর বড় বড় বিল্ডিং দেখবো সেটা ঠিক নয়। এখানে কাঁচা রাস্তাই মানায়। ১৯৯৬ সালে এ জাদুঘরের উদ্বোধনে এসেছিলাম। এখানকার বিখ্যাত জামদানি। এদের আরও উৎসাহ দেওয়া দরকার। আন্তর্জাতিকভাবে এ শিল্প ও এখানকার পণ্য-সামগ্রী তুলে ধরতে হবে। এখানকার পণ্য আমাদের জন্য লাভজনক। এ বিষয়গুলো নজর দিলে আমাদের এখানে বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্নে উজ্জীবিত হয়ে এ ফাউন্ডেশনের যাত্রা সূচনা করেছিলেন সেটা স্বার্থক হবে।

 

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এ সম্পদ বাংলাদেশের। এখানকার পরিবেশ ভিন্ন মেজাজের। এখানে আগাগোড়া আমাদের সংস্কৃতি ফুটে উঠবে। আজকের সমাবেশ সাংস্কৃতিক । সব জায়গায় রাজনীতি টেনে আনবেন না। এখানে স্লোগান পাল্টা স্লোগান কী আদৌ প্রয়োজন? আমাকে যার যার শক্তি দেখানোর চেষ্টা। আমি রাস্তায় বের হলে স্লোগান দিতে পারেন। তবে এখানে সে ধরনের স্লোগান মোটেও মানায় না। স্লোগান পাল্টা স্লোগান মোটেও আমার ভালো লাগেনি। আমি বিরক্ত হয়েছি। এটা আমাদের সংস্কৃতির আমানত। এটা আপনারা বজায় রাখবেন। এটা আমার অনুরোধ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য শেষে ফিতা কেটে আনুষ্ঠানিক মেলা উদ্বোধন করেন তিনি।

 

পরে মেলার বিভিন্ন দেশীয় কারু পণ্যের স্টল ঘুরে দেখেন এবং দোকানিদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এরআগে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বলেন, সংস্কৃতির আসল রুপ ধরে রাখতে হবে। বাঁশ দিয়ে আপনারা যে সেতু তৈরি করেছেন সেটাই এখানকার ঐতিহ্য। এটাকে বহাল রাখতে হবে। এটার আদি রুপটাকে তার সঠিক জায়গায় রাখতে হবে।

 

তিনি বলেন, দেশে গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমাদের দেশ আবারও সাম্প্রতিকয়তার ছোবলে আক্রান্ত। একটি মহল জঙ্গিবাদের দ্বারা এদেশে বিশৃঙ্খলার সূচনা করেছে। তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় হিংস্র থাবা এদেশে দৃশ্যমান হচ্ছে। এখানে রাজনীতির পাশাপাশি সংস্কৃতির একটি দায়িত্ব আছে। এসব জঙ্গিবাদ সংস্কৃতির চিরায়ত শত্রু। এরা আমাদের স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি। এদের হৃদয়ে বাংলাদেশ নেই। এইসব অপশক্তিকে যেকোনো মূল্যে রুখতে হবে। শেখ হাসিনাই আমাদের আসল ঠিকানা। আজ সময় এসেছে তার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। অপশক্তি দূর করতে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

 

তিনি আরও বলেন, আমাদের উন্নয়ন দেখে বিএনপির অন্তরজ্বালা সৃষ্টি হয়েছে। কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী একদিনে ১০০ ব্রিজ উদ্বোধন করেন। পরশুদিন নরসিংদীর ব্রিজের উদ্বোধনী ফলক পুড়িয়ে দিয়েছে একটি মহল। তারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে আগ্রহী নয়। তাদের মধ্যে শুধু খাই খাই ভাব। তারা ভোটে হেরে যাবে তাই এমন করছে। অসুস্থ রাজনীতি করতে করতে মির্জা ফখরুলরা আজ অসুস্থ হয়ে গেছে। আমরা দেশে কোনো অশান্তি চাই না। প্রতিদিনই আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি। যারা আন্দোলনের নামে সহিংসতা করবে তার সমুচিত জবাব দিতে হবে। এখানে কোনো আপস নেই। আমরা কোনো উস্কানি দিবো না। এইসব উস্কানি বন্ধ করতে আমাদের একতাবদ্ধ থাকতে হবে। তারা এইসব কর্মকাণ্ড করবে আমরা চুপ করে কি ললিপপ খাবো? তার সমুচিত জবাব আমরা দিবো। এ সময় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন এ লোকজ ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের যাত্রা শুরু করেন। বঙ্গবন্ধু নিজ উদ্যোগে এখানে জায়গা বরাদ্দ দেন। একসময় এ জায়গায় এমন বড় অট্টালিকা ছিল না, কোনো লাইব্রেরি ছিল না। কেএম খালিদ বলেন, ওবায়দুল কাদেরের হাত ধরে রাষ্ট্র যেভাবে সমৃদ্ধ হয়েছে ঠিক তেমন সমৃদ্ধ হয়েছি আমরাও। আমার পরিবার তার কাছে ঋণী। বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে চলে।